ঢাকা থেকে উত্তরবঙ্গগামী একটি চলন্ত ট্রাকে মানসিক ভারসাম্যহীন এক তরুণীকে (২০) ধর্ষণের অভিযোগে চালক সোহেল রানাকে আমৃত্যু কারাদণ্ড ও ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করেছেন আদালত। বৃহস্পতিবার দুপুরে সিরাজগঞ্জের নারী ও শিশু ট্রাইব্যুনাল-২ এর বিচারক বেগম সালমা খাতুন আসামির উপস্থিতিতে এ রায় দেন।

দণ্ডিত আসামি ট্রাকচালক সোহেল রানা (৩২) বগুড়া সদর উপজেলার আশুখোলা গ্রামের মনসুর আলীর ছেলে।

সিরাজগঞ্জের নারী ও শিশু ট্রাইব্যুনালের পিপি মাসুদুর রহমান এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

মামলা সূত্রে জানা যায়, ২০২১ সালের ২২ জানুয়ারি দেশে করোনাভাইরাসের কারণে লকডাউন চলছিল। তখন স্বাভাবিক গাড়ি চলাচল বন্ধ ছিল। চন্দ্রা থেকে এই ভিকটিমসহ ২ জন পুরুষ যাত্রী নিয়ে ড্রাইভার সোহেল রানা এবং হেলপার ওহাব শেখ তাদের ট্রাক বগুড়ার উদ্দেশ্যে যাত্রা শুরু করে। বঙ্গবন্ধু সেতু পার হওয়ার পর ট্রাকের হেলপার ট্রাক থামিয়ে যাত্রীদের জানান- ট্রাকটি নষ্ট হয়ে গেছে। সারতে অনেক সময় লাগবে। এতে পুরুষ যাত্রী দুজন নেমে যান। তবে মহিলা যাত্রী ভিকটিম তিনি ট্রাকের কেবিনের মধ্যেই ছিলেন।

পুরুষ যাত্রী দুজন নেমে যাওয়ার পর হেলপার ওহাব ও ট্রাক ড্রাইভার সোহেল রানা ভিকটিমকে ট্রাকের কেবিনের ভেতরে রেখে বাইরে থেকে দরজা আটকে দেন। এ সময় আসামি সোহেল রানা ভিকটিমকে জোর করে ধর্ষণ করতে শুরু করলে ভিকটিম চিৎকার শুরু করেন। তার চিৎকার শুনে ওই ট্রাকের ১ জন পুরুষ যাত্রী ইউনুস আলী সুমন ট্রাকের কাছে গিয়ে ধর্ষণের ঘটনাটি তার মোবাইলে ভিডিও করেন। এটা আসামিরা দেখে দ্রুত ভিকটিমসহ ট্রাক নিয়ে বগুড়ার দিকে চলে যান।

তখন ইউনুস আলী সুমন-৯৯৯ নাম্বারে ফোন করে পুলিশকে বিষয়টি অবগত করেন। পুলিশ কন্ট্রোল রুম থেকে অবগত হয়ে কড্ডার মোড় নামক স্থানে ২ জন আসামি এবং ভিকটিমসহ ট্রাকটি আটক করে। তাদের সবাইকে বঙ্গবন্ধু সেতু পশ্চিম থানায় নেওয়ার পর ভিকটিমের বাড়িতে খবর দিলে তার বাবা এবং ভাই থানায় আসেন। তারা ভিকটিমের কাছে ঘটনা শুনে ভিকটিমের বাবা আলতাফ হোসেন খান অভিযুক্ত দুজনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন।

মামলার পর ট্রাক ড্রাইভার সোহেল রানা স্বেচ্ছায় নিজের দোষ স্বীকার করে ম্যাজিস্ট্রেটের সামনে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি প্রদান করেন। সাক্ষ্যগ্রহণ পর্যায়ে ২০২৩ সালের ১২ মে আসামি ওহাব কারাগারে মৃত্যুবরণ করেন।