1. shadhinsomoy.com@gmail.com : স্বাধীন সময় : স্বাধীন সময়
  2. info@www.shadhinsomoy.com : স্বাধীন সময় :
রবিবার, ০৬ জুলাই ২০২৫, ১০:১৪ অপরাহ্ন

হাসিনা নিজ ঘরেই রোপণ করেন দুর্নীতির বিষবৃক্ষ

  • Update Time : মঙ্গলবার, ২৪ ডিসেম্বর, ২০২৪

ছাত্র-জনতার গণ-অভ্যুত্থানে ভারতে পালিয়ে যাওয়া সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও তার পরিবারের সদস্যদের দুর্নীতির ফিরিস্তি একে একে প্রকাশ পাচ্ছে। দুর্নীতির বিরুদ্ধে ‘জিরো টলারেন্স’র বক্তৃতা দেওয়া হাসিনার সন্তান ও বোন-ভাগনিরা ছিলেন আকণ্ঠ দুর্নীতিতে নিমজ্জিত। নিজ ঘরেই তিনি রোপণ করেছিলেন দুর্নীতির বিষবৃক্ষ। এমন তথ্য পেয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।

রূপপুরসহ ৯টি প্রকল্পে হাসিনা পরিবারের ৮০ হাজার কোটি টাকার দুর্নীতি এবং শেখ হাসিনা ও সজীব ওয়াজেদ জয়ের বিরুদ্ধে ৩০ কোটি মার্কিন ডলার (প্রায় ৩ হাজার ৬০০ কোটি টাকা) পাচারের অভিযোগ অনুসন্ধান করছে সংস্থাটির বিশেষ একটি টিম। প্রাথমিক অনুসন্ধানেই শেখ হাসিনা, সজীব ওয়াজেদ জয়, তার ছোট বোন শেখ রেহানা এবং রেহানার মেয়ে টিউলিপ সিদ্দিকের বিরুদ্ধে নানা তথ্য-উপাত্ত সংগ্রহ করছেন তারা। সংশ্লিষ্ট সূত্রে পাওয়া গেছে এসব তথ্য।

রোববার এ সংক্রান্ত প্রশ্নের জবাবে দুদক চেয়ারম্যান মোহাম্মদ আবদুল মোমেন বলেন, ‘এটা অনুসন্ধান পর্যায়ে রয়েছে। অনেক ঘটনাই সত্য। অনেক তথ্য-উপাত্ত আসছে। সুনির্দিষ্টভাবে তথ্য-উপাত্ত আসার পর এ বিষয়ে বিস্তারিত জানানো হবে।’ জানা গেছে, দুদকের কাছে অভিযোগ রয়েছে-রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্পে দুর্নীতির মাধ্যমে অতিরিক্ত খরচ দেখিয়ে প্রকল্প থেকে ১২.৬৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের মধ্যে ৫ বিলিয়ন আত্মসাৎ করা হয়েছে।সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, তার ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয় এবং শেখ রেহানার মেয়ে টিউলিপ সিদ্দিক পরস্পর যোগসাজশে এই দুর্নীতি সংঘটিত করেছেন। হাতিয়ে নেওয়া অর্থ মালয়েশিয়ায় বিভিন্ন অফশোর ব্যাংক অ্যাকাউন্টের মাধ্যমে পাচার করেছেন তারা।

প্রাথমিক অনুসন্ধানে দুদকের প্রাপ্ত তথ্যে জানা গেছে, টিউলিপ সিদ্দিকের চাচা তারিক আহমেদ সিদ্দিক ছিলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নিরাপত্তা উপদেষ্টা। তার স্ত্রী ও মেয়ে ‘প্রচ্ছায়া লিমিটেড’ নামে একটি ভুয়া কোম্পানির অংশীদার। এই কোম্পানি এবং আরেকটি বিতর্কিত কোম্পানি ডেসটিনি গ্রুপের মাধ্যমে প্রায় ৯০০ মিলিয়ন ডলার যুক্তরাজ্যসহ বিভিন্ন দেশে পাচার করা হয়েছে। এ অর্থ দিয়ে যুক্তরাজ্যে জুমানা ইনভেস্টমেন্ট অ্যান্ড প্রপার্টিজ লিমিটেড নামে কোম্পানি খোলা হয়েছে।

আরও জানা গেছে, রাশিয়ার কাছ থেকে ৪০০ কোটি পাউন্ড ঘুস নেয়ার অভিযোগে, যুক্তরাজ্যে লেবার পার্টির মন্ত্রী টিউলিপ সিদ্দিককে জিজ্ঞাসাবাদ করার যে খবর গণমাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছে সে সম্পর্কে তথ্য-উপাত্ত সংগ্রহ করছে দুদক। রোববার রাতে লন্ডনে টিউলিপের কার্যালয়ে যান ব্রিটিশ মন্ত্রিসভার ন্যায় ও নৈতিকতাবিষয়ক বিভাগের সদস্যরা।

দুদক জানতে পেরেছে, ২০১৪ সালে যুক্তরাষ্ট্র বনাম রিজভি আহমেদ মামলায় সজীব ওয়াজেদ জয়ের নাম প্রথমবার অর্থ পাচারে সন্দেহভাজন হিসাবে উঠে আসে। পরে মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থার তদন্তে জয়ের জড়িত থাকার প্রমাণ পাওয়া যায়। তদন্তে উঠে এসেছে-হংকং ও কেম্যান আইল্যান্ডসের বিভিন্ন অফশোর অ্যাকাউন্ট থেকে যুক্তরাষ্ট্রের ওয়াশিংটন, নিউইয়র্ক এবং যুক্তরাজ্যের লন্ডনে অর্থ স্থানান্তরিত করা হয়। মার্কিন বিচার বিভাগের সিনিয়র অ্যাটর্নি লিন্ডা স্যামুয়েলস এবং স্পেশাল এজেন্ট লা প্রেভট ৩০০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার বাংলাদেশ থেকে যুক্তরাষ্ট্রে স্থানান্তরের প্রমাণ পেয়েছেন। জানা গেছে, দুদকের বিশেষ অনুসন্ধান দল নির্বাচন কমিশন এবং পাসপোর্ট বিভাগ থেকে হাসিনা পরিবারের সদস্যদের পরিচয়সংক্রান্ত নথি সংগ্রহ করেছেন। এরপর এসব নথির তথ্য উল্লেখ করে বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিটের (বিএফআইইউ) কাছে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের বিদেশি ব্যাংক অ্যাকাউন্টের নথি ও বিবরণ চেয়ে চিঠি পাঠানো হয়েছে।

এছাড়া শেখ হাসিনা ও তার ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয়ের বিরুদ্ধে ৩০০ মিলিয়ন বা ৩০ কোটি মার্কিন ডলার (প্রায় ৩ হাজার ৬০০ কোটি টাকা) পাচারের পৃথক আরেকটি অভিযোগ অনুসন্ধান করছে দুদকের একই টিম। সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে আলাপে জানা গেছে, ২০১৪ সালে মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থা ফেডারেল ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (এফবিআই) তদন্তে আর্থিক কেলেঙ্কারিতে জয়ের জড়িত থাকার বিষয়টি প্রকাশ পায়। বিশেষ করে তার নামে হংকং ও কেম্যান আইল্যান্ডের বিভিন্ন ব্যাংক হিসাব থেকে ওয়াশিংটন ডিসি, নিউইয়র্ক ও যুক্তরাজ্যের লন্ডনের বিভিন্ন ব্যাংক হিসাবে টাকা পাচারের তথ্য পাওয়া গেছে। পাচার করা টাকার পরিমাণ ৩০০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার।

জানা গেছে, নয়টি মেগা প্রকল্পের দুর্নীতির অভিযোগ অনুসন্ধানে ১৮ ডিসেম্বর পাঁচ সদস্যের একটি বিশেষ অনুসন্ধান দল গঠন করেছে দুদক। অনুসন্ধানে নেতৃত্ব দিচ্ছেন দুদকের উপপরিচালক মো. সালাহউদ্দিন। দলের অন্য সদস্যরা হলেন-উপপরিচালক মো. সাইদুজ্জামান, সহকারী পরিচালক আফনান জান্নাত, এসএম রাশেদুল হাসান ও একেএম মর্তুজা আলী। তারা আট প্রকল্পে ২১ হাজার কোটি টাকা দুর্নীতির অভিযোগ অনুসন্ধান করবেন। পাশাপাশি রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র প্রকল্পে ৫৯ হাজার কোটি টাকার দুর্নীতির অভিযোগ অনুসন্ধানের কাজেও নিয়োজিত থাকবেন।

আরও জানা গেছে, শেখ হাসিনা ও জয়ের বিরুদ্ধে ৩০ কোটি ডলার পাচারের গুরুতর অভিযোগের বিপরীতে এফবিআই তাদের লন্ডনের প্রতিনিধির মাধ্যমে তথ্য-প্রমাণ সংগ্রহ করে নিশ্চিত হয়েছে। ওই সব তথ্য-প্রমাণ দুদককে সরবরাহ করা হবে। হাসিনা ও জয়ের গুরুতর আর্থিক অনিয়ম এবং অর্থ পাচারের মতো ভয়াবহ অপরাধ সংঘটনের প্রমাণ শিগগিরই দুদকের হাতে চলে আসবে। যুক্তরাষ্ট্রের ডিপার্টমেন্ট অব জাস্টিসের (ডিওজে) সিনিয়র ট্রায়াল অ্যাটর্নি লিন্ডা স্যামুয়েল শেখ হাসিনা ও জয়ের ‘স্পেশাল এজেন্ট’ লাপ্রিভোটের সঙ্গে যোগাযোগ করে বাংলাদেশ থেকে ৩০ কোটি ডলার যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন ব্যাংক হিসাবে জমা করা হয়েছে মর্মে নিশ্চিত হয়েছেন। আরেকটি সূত্র বলেছে, এসব অভিযোগের অনেক দালিলিক প্রমাণ পাওয়ার পরই কমিশন শেখ হাসিনা এবং তার ছেলে জয়ের বিরুদ্ধে ৩০ কোটি ইউএস ডলার পাচারের অভিযোগ অনুসন্ধানের অনুমোদন দিয়েছে।

রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র প্রকল্প থেকে মালয়েশিয়ার ব্যাংকের মাধ্যমে শেখ হাসিনা, তার ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয় ও ভাগনি টিউলিপ সিদ্দিকের ৫ বিলিয়ন ডলার লোপাটের অভিযোগ অনুসন্ধানে দুদকের নিষ্ক্রিয়তা কেন অবৈধ ঘোষণা করা হবে না, তা জানতে চেয়ে ১৫ ডিসেম্বর রুল জারি করেছিলেন হাইকোর্টের একটি বেঞ্চ। দুদিন পর অভিযোগ অনুসন্ধানের সিদ্ধান্ত জানিয়ে দুদকের পক্ষ থেকে বলা হয়, আওয়ামী লীগ সরকারের বিশেষ অগ্রাধিকারের আট প্রকল্পে ২১ হাজার কোটি টাকা দুর্নীতির অভিযোগ পেয়েছে কমিশন। এছাড়া রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র প্রকল্পে ৫৯ হাজার কোটি টাকার দুর্নীতির অভিযোগও দুদক হাতে পেয়েছে।

Please Share This Post in Your Social Media

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category

পুরাতন সংবাদ পড়ুন

সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি রবি
 
১০১১১২১৩
১৪১৫১৬১৭১৮১৯২০
২১২২২৩২৪২৫২৬২৭
২৮২৯৩০৩১  
© All rights reserved
ওয়েবসাইট ডিজাইন : ইয়োলো হোস্ট