1. shadhinsomoy.com@gmail.com : স্বাধীন সময় : স্বাধীন সময়
  2. info@www.shadhinsomoy.com : স্বাধীন সময় :
বৃহস্পতিবার, ০১ মে ২০২৫, ০৯:০৯ অপরাহ্ন

মাকে হত্যা করে ডিপ ফ্রিজে রাখেন ছেলে, সাজান ডাকাতির নাটক

  • Update Time : মঙ্গলবার, ১২ নভেম্বর, ২০২৪

বগুড়ার দুপচাঁচিয়ায় দিনে-দুপুরে গৃহবধূ উম্মে সালমা খাতুনকে (৫০) তার ছেলে সাদ বিন আজিজুর রহমান (১৯) হত্যা করে ডিপ ফ্রিজে রেখেছিলেন। আটকের পর র‌্যাব কর্মকর্তাদের জিজ্ঞাসাবাদে বিষয়টি স্বীকার করেছেন ছেলে সাদ বিন আজিজুর রহমান। মঙ্গলবার (১২ নভেম্বর) দুপুরে র‌্যাব-১২ এর বগুড়া ক্যাম্পে প্রেস ব্রিফিংয়ে কোম্পানি কমান্ডার মেজর মো. এহতেশামুল হক খান এ তথ্য জানান।

তিনি বলেন, হাত খরচের টাকা নিয়ে সাদ বিন আজিজুর রহমানের সঙ্গে তার মা উম্মে সালমা খাতুনের ঝগড়া বিবাদ চলে আসছিল। প্রায় প্রতিদিনই বাড়ি থেকে ৫০০-১০০০ টাকা হারিয়ে যেত। ঘটনার দিন হাত খরচের টাকা চেয়ে না পাওয়ায় সাদ তার মাকে হত্যা করে ডাকাতি বলে প্রচারের চেষ্টা করেন।
নিহত উম্মে সালমা খাতুন দুপচাঁচিয়া ডিএস (দারুস সুন্নাহ) কামিল মাদরাসার উপাধ্যক্ষ আজিজুর রহমানের স্ত্রী। আজিজুর রহমান স্থানীয় উপজেলা মসজিদের খতিব এবং আজিজিয়া হজ্ব কাফেলা নামে একটি প্রতিষ্ঠানের কর্ণধার।
জানা গেছে, আজিজুর ও উম্মে সালমা খাতুন দম্পতির দুই ছেলে এবং এক মেয়ে। বড় দুই ছেলে-মেয়ে ঢাকায় থাকেন। আর ছোট ছেলে সাদ বিন আজিজুর রহমান বাবার মাদরাসায় আলিম শ্রেণিতে অধ্যয়নরত। ছোট ছেলেকে নিয়ে আজিজুর-উম্মে সালমা দম্পতি দুপচাঁচিয়া উপজেলা সদরের জয়পুরপাড়া এলাকায় নিজেদের চারতলা বিশিষ্ট ‘আজিজিয়া মঞ্জিল’-এর তৃতীয় তলায় বসবাস করতেন। গত ১০ নভেম্বর আজিজিয়া মঞ্জিলে খুন হন গৃহবধূ উম্মে সালমা খাতুন। হত্যার পর তার মরদেহ ডিপ ফ্রিজে রাখা হয়। ওইদিন বিকেল ৩টার দিকে নিহতের ছোট ছেলে সাদ বিন আজিজুর রহমান বাড়িতে গিয়ে তার মাকে না পাওয়ার কথা তার বাবাসহ স্বজনদের জানান। এরপর খোঁজাখুঁজির একপর্যায়ে তিনি ডিপ ফ্রিজের ভেতরে তার মায়ের হাত-পা বাঁধা মরদেহ উদ্ধার করেন। ঘরে রাখা স্টিলের আলমারিতে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কাটার চিহ্ন এবং তার নিচে কুড়াল পড়ে থাকার চিত্র দেখে পরিবারের সদস্যরা ঘটনাটিকে ডাকাত দলের কাজ বলে সন্দেহ করেন।
খবর পেয়ে পুলিশ দ্রুত ঘটনাস্থলে ছুটে যায়। তবে বাড়ি থেকে টাকা-পয়সা কিংবা স্বর্ণালংকার খোয়া না যাওয়ায় এমনকি নিহতের কানে থাকা স্বর্ণের দুল অক্ষত থাকায় পুলিশের সন্দেহ হয়। ওইদিন রাতে সাদ বিন আজিজুর রহমানকে থানায় নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদও করা হয়।

এ হত্যাকাণ্ড নিয়ে মঙ্গলবার দুপুর সাড়ে ১২টায় র‌্যাবের বগুড়া ক্যাম্পে এক ব্রিফিংয়ে কোম্পানি কমান্ডার মেজর মো. এহতেশামুল হক খান জানান, হত্যাকারী সন্দেহে নিহত উম্মে সালমা খাতুনের ছেলে সাদ বিন আজিজুর রহমানকে সোমবার দিবাগত রাত ১২টার পর জিজ্ঞাসাবাদের জন্য নিয়ে আসেন। ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদের একপর্যায়ে সাদ তার মাকে হত্যার কথা স্বীকার করেন।
তিনি বলেন, ঘটনার দিন হাত খরচের টাকা চেয়ে না পেয়ে মায়ের সঙ্গে সাদ বিন আজিজুর রহমানের বাকবিতণ্ডা হয় এবং তিনি নাস্তা না খেয়েই মাদরাসায় চলে যান। বেলা ১১টার দিকে ক্লাসের বিরতি হলে সাদ মাদরাসা থেকে বের হন। এরপর দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে তিনি বাড়িতে ঢুকে তার মাকে কুমড়া কাটতে দেখেন। তখন পূর্বপরিকল্পনা অনুযায়ী সাদ পেছন থেকে তার মায়ের নাক ও মুখ চেপে ধরেন। এ সময় ধস্তাধস্তির একপর্যায়ে কুমড়া কাটার বঁটিতে সাদের তর্জনীর আঙুল কেটে যায়। কিন্তু তারপরও সে দুই হাত দিয়ে নাক ও মুখ চেপে ধরে শ্বাসরোধ করে তার মায়ের মৃত্যু নিশ্চিত করে। এরপর ওড়না দিয়ে মায়ের দুই হাত বেঁধে মরদেহ ডিপ ফ্রিজের মধ্যে রাখেন। পরে ঘটনাটি ডাকাতি বলে প্রমাণের জন্য তিনি কুড়াল দিয়ে আলমারিতে কোপ দিয়ে প্রধান ফটকে তালা দিয়ে বাইরে চলে যান। কিছুক্ষণ পর আবার তিনি তালা খুলে ভেতরে ঢুকে তার মাকে খুঁজে না পাওয়ার কথা ফোনে বাবাসহ স্বজনদের জানান।
ব্রিফিংয়ে জানানো হয়, অভিযুক্ত আসামি সাদ বিন আজিজুর রহমানকে দুপচাঁচিয়া থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।দুপচাঁচিয়া থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ফরিদুল ইসলাম জানান, উম্মে সালমা খাতুন হত্যায় এখনো মামলা হয়নি। তবে নিহতের বড় ছেলে এজাহার দায়ের করবে বলে আমাদের জানানো হয়েছে।

Please Share This Post in Your Social Media

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category

পুরাতন সংবাদ পড়ুন

সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি রবি
 
১০১১
১২১৩১৪১৫১৬১৭১৮
১৯২০২১২২২৩২৪২৫
২৬২৭২৮২৯৩০৩১  
© All rights reserved
ওয়েবসাইট ডিজাইন : ইয়োলো হোস্ট