আদালত প্রতিবেদক: প্রহসনের নির্বাচন ও রাষ্ট্রদ্রোহের অভিযোগে সাবেক প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়ালকে কারাগারে পাঠিয়েছেন আদালত।রোববার (২৯ জুন) ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট জি.এম. ফারহান ইশতিয়াক শুনানি শেষে এই আদেশ দেন।
এর আগে রিমান্ড শেষে তাকে আদালতে হাজির করা হয়। শুনানিকালে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা, পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)-এর পরিদর্শক সৈয়দ সাজেদুর রহমান তাকে কারাগারে পাঠানোর আবেদন করেন। অন্যদিকে, আসামিপক্ষ জামিন এবং কারাগারে ডিভিশনের আবেদন করেন, তবে রাষ্ট্রপক্ষ জামিনের বিরোধিতা করে। উভয় পক্ষের বক্তব্য শুনে আদালত জামিন আবেদন নামঞ্জুর করে তাকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।
এর আগে গত ২৫ জুন রাজধানীর মগবাজার এলাকা থেকে কাজী হাবিবুল আউয়ালকে গ্রেপ্তার করে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগ (ডিবি)। পরদিন ২৬ জুন আদালত তার তিন দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
গত ২২ জুন বিএনপি পক্ষ থেকে দায়ের করা মামলায় অভিযোগ করা হয়, আওয়ামী লীগ সরকারের সময়ে অনুষ্ঠিত ২০১৪, ২০১৮ এবং ২০২৪ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নির্বাচন কমিশন সাংবিধানিক দায়িত্ব পালনে ব্যর্থ হয়। বরং ভোটারদের ভয়ভীতি প্রদর্শন, বিরোধী দলীয় নেতাকর্মীদের গণগ্রেপ্তার, অপহরণ, গুম ও নির্যাতনের মাধ্যমে ভোটারবিহীন নির্বাচন আয়োজন করা হয়।
পরে ২৫ জুন মামলায় নতুন করে রাষ্ট্রদ্রোহ, প্রতারণা ও অর্থ আত্মসাতের ধারা সংযুক্ত করা হয়। মামলায় অভিযুক্তদের মধ্যে রয়েছেন ২০১৪ সালের সিইসি কাজী রকিবউদ্দীন আহমদ, ২০১৮ সালের সিইসি এ কে এম নূরুল হুদা ও ২০২৪ সালের সিইসি কাজী হাবিবুল আউয়াল।
এছাড়াও সাবেক পুলিশ মহাপরিদর্শক (আইজিপি) হাসান মাহমুদ খন্দকার, এ কে এম শহীদুল হক, জাবেদ পাটোয়ারী, বেনজীর আহমেদ ও চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনকে আসামি করা হয়েছে।
মামলায় উল্লেখ করা হয়েছে, তিনটি নির্বাচনে জনগণের ভোটাধিকার হরণ করে ক্ষমতাসীনদের বিজয় নিশ্চিত করা হয়। নির্বাচনী আচরণবিধি ও সংবিধান লঙ্ঘন করে সরকারি কর্মকর্তার দায়িত্বে থেকেও ভোট প্রক্রিয়ায় অবৈধ হস্তক্ষেপ করা হয়।
এ ঘটনার প্রত্যক্ষ সাক্ষী হিসেবে বিবেচনায় নেওয়া হয়েছে ভোট কেন্দ্র এলাকার ভোটার, যারা ভোট দিতে পারেননি, এবং আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য, প্রিজাইডিং ও পুলিং অফিসাররা। এছাড়াও ব্যালট পেপারে থাকা সিল ও স্বাক্ষর বিশ্লেষণের মাধ্যমে প্রকৃত ভোটারদের চিহ্নিত করে সত্য উদঘাটনের দাবি জানিয়েছে বাদী পক্ষ।
Leave a Reply