1. shadhinsomoy.com@gmail.com : স্বাধীন সময় : স্বাধীন সময়
  2. info@www.shadhinsomoy.com : স্বাধীন সময় :
সোমবার, ৩০ জুন ২০২৫, ১১:১৬ অপরাহ্ন

বিদেশগামী শ্রমিকদের পকেট কেটেছে সিন্ডিকেট, প্রমাণ মিলেছে তদন্তে

  • Update Time : সোমবার, ৫ মে, ২০২৫

বিদেশগামী বাংলাদেশি শ্রমিকদের পকেট কেটে শত কোটি টাকা হাতিয়ে নেওয়া টিকিট কেলেঙ্কারির প্রমাণ মিলেছে সরকারি তদন্তে। ১১টি আন্তর্জাতিক এয়ারলাইন্স, তাদের জেনারেল সেলস এজেন্ট (জিএসএ) এবং অন্তত ৩০টি ট্রাভেল এজেন্সি এই সিন্ডিকেটে জড়িত বলে তদন্তে উঠে এসেছে। আর এই সিন্ডিকেটের কেন্দ্রীয় ভূমিকায় রয়েছেন গ্যালাক্সি ইন্টারন্যাশনালের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আহমেদ ইউসুফ ওয়ালিদ।

বেসামরিক বিমান চলাচল ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের (এমওসিএটি) গঠিত নয় সদস্যের তদন্ত কমিটির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, জিএসএ হিসেবে সৌদিয়া, কাতার এয়ারওয়েজ, সালাম এয়ার, জাজিরা এয়ারওয়েজ, ওমান এয়ার এবং থাই এয়ারওয়েজের টিকিটের নিয়ন্ত্রণ নেন ওয়ালিদ। তার প্রতিষ্ঠান যাত্রীদের নাম ছাড়াই গ্রুপ বুকিংয়ের মাধ্যমে টিকিট মজুত করে, পরে সেগুলো অনানুষ্ঠানিকভাবে হোয়াটসঅ্যাপের মাধ্যমে দ্বিগুণ বা তিনগুণ দামে বিক্রি করে।

ট্রাভেল এজেন্সিগুলোর বিরুদ্ধে অভিযোগ, তারা নির্ধারিত ৭ শতাংশ কমিশনের বাইরে বাড়তি দাম নির্ধারণ করে বাজার ব্যবস্থাকে কাজে লাগিয়ে মুনাফা করেছে। এমনকি, কিছু প্রতিষ্ঠান সাব-এজেন্টদের মাধ্যমে ‘ব্লক টিকিট’ বিক্রির বিজ্ঞাপন দিয়ে সিন্ডিকেট চালিয়েছে।

এজেন্সিগুলোর মধ্যে রয়েছে- কাজী এয়ার ইন্টারন্যাশনাল, সিটিকম ইন্টারন্যাশনাল, কিং এয়ার এভিয়েশন, আরবিসি ইন্টারন্যাশনাল, মেগা ইন্টারন্যাশনাল, মাদার লাভ এয়ার ট্রাভেলস, জেএস ট্রাভেলস অ্যান্ড ট্যুরস, সাদিয়া ট্রাভেলস, হাশেম এয়ার ইন্টারন্যাশনাল, নারিয়া ট্রাভেলস, এলহাম কর্পোরেশন এবং আল গাজি। সবাইকে কারণ দর্শানোর নোটিশ পাঠিয়ে শুনানিতে ডাকা হয়েছে।

এনবিআর সূত্রে জানা গেছে, ওয়ালিদ ও তার স্ত্রীর ব্যাংক হিসাব কর ফাঁকির অভিযোগে জব্দ করা হয়েছে। তাদের প্রতিষ্ঠান ইডিএস শুল্ক ফাঁকি দিয়ে বিদেশি মদ বাজারজাত করছে বলেও তদন্তে উঠে এসেছে। ইতোমধ্যে ডিউটি ফ্রি ব্যবসার আড়ালে চালানো এই কর্মকাণ্ডে শুল্ক গোয়েন্দারা কয়েকবার অভিযান চালিয়েছে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক কর্মকর্তা জানান, ওয়ালিদের এই উত্থান মূলত পতিত সরকারের ছত্রছায়াতেই। গত ১৭ বছরে প্রায় ৮টি আন্তর্জাতিক এয়ারলাইন্সের জিএসএ নিয়ন্ত্রণে নিয়েছেন তিনি। অভিযোগ রয়েছে, সালমান এফ রহমান তার গোপন অংশীদার। এসব ব্যবসার আয়ের একটি অংশ ক্ষমতাসীন দলের বিভিন্ন নেতার পকেটে যায় বলেও তদন্তে উল্লেখ আছে।

এ বিষয়ে কর কমিশনার মো. আব্দুর রকিব বলেন, ‘যারা কর ফাঁকি দিয়েছে এবং বাজার ব্যবস্থাকে ব্যবহার করেছে, তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। অনেক ক্ষেত্রে ৫০ হাজার টাকার টিকিট ১.৫ লাখ টাকায় বিক্রি হয়েছে, যা নজিরবিহীন প্রতারণা।’

বেসামরিক বিমান চলাচল ও পর্যটন মন্ত্রণালয় বলছে, ‘টিকিট বিক্রির নামে কোনো সিন্ডিকেট বা শোষণ সহ্য করা হবে না। প্রবাসী শ্রমিকদের স্বার্থ রক্ষায় সরকার প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।’ গত জানুয়ারিতে আটাবের (অ্যাসোসিয়েশন অব ট্রাভেল এজেন্টস অব বাংলাদেশ) অভিযোগের পর ১১ ফেব্রুয়ারি মন্ত্রণালয়ের এক প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, যাত্রীর নাম ও পাসপোর্ট অনুলিপি ছাড়া কোনো টিকিট বুক করা যাবে না।

এই নির্দেশনার ফলে অনেক মজুতকৃত টিকিট গ্লোবাল ডিস্ট্রিবিউশন সিস্টেমে (জিডিএস) ফিরিয়ে দিতে বাধ্য হয় এয়ারলাইন্সগুলো, ফলে দাম কমে আসে এবং স্বচ্ছতা ফিরে আসে। বর্তমানে ঢাকা-সৌদি রুটে টিকিটের দাম ৪৮-৫০ হাজার টাকায় নেমে এসেছে, যা আগে ছিল প্রায় ১.৯ লাখ টাকা।

অ্যাসোসিয়েশন অব ট্রাভেল এজেন্টস অব বাংলাদেশের (আটাব) মহাসচিব আফসিয়া জান্নাত সালেহ বলেন, ‘জিএসএ-দের কারণে প্রকৃত ট্রাভেল এজেন্সিগুলো টিকিট পায় না। বরং তারা ঘুষের বিনিময়ে নির্দিষ্ট কিছু সিন্ডিকেটকে সুবিধা দেয়।’

সরকারের গঠিত উচ্চ পর্যায়ের তদন্ত কমিটি তাদের প্রতিবেদনে বলেছে, শুধু লাভের কথা না ভেবে জনসেবার দিকটিও বিবেচনায় রাখতে হবে। প্রবাসী শ্রমিকদের কথা মাথায় রেখে এয়ারলাইন্সগুলোকে দায়িত্বশীল হতে হবে।

তবে এখনো কারসাজির মূল হোতাদের বিরুদ্ধে দৃশ্যমান শাস্তিমূলক ব্যবস্থা না নেওয়ায় প্রশ্ন উঠেছে। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, দৃষ্টান্তমূলক ব্যবস্থা না নিলে ভবিষ্যতেও এমন সিন্ডিকেট গড়ে উঠবে

Please Share This Post in Your Social Media

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category

পুরাতন সংবাদ পড়ুন

সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি রবি
 
১০১১১২১৩১৪১৫
১৬১৭১৮১৯২০২১২২
২৩২৪২৫২৬২৭২৮২৯
৩০  
© All rights reserved
ওয়েবসাইট ডিজাইন : ইয়োলো হোস্ট