1. shadhinsomoy.com@gmail.com : স্বাধীন সময় : স্বাধীন সময়
  2. info@www.shadhinsomoy.com : স্বাধীন সময় :
বৃহস্পতিবার, ০১ মে ২০২৫, ১২:১৬ অপরাহ্ন

১৫ দিন আগে ভাগনেকে সঙ্গে নেন মামা, ধরাতে চেয়েছিলেন জাহাজের হাল

  • Update Time : বুধবার, ২৫ ডিসেম্বর, ২০২৪

চাঁদপুরে সাত খুন

বিজ্ঞাপন

চাঁদপুরের হাইমচর উপজেলার ইশানবালা খালের মুখে নোঙর করা এমভি আল-বাখেরা নামের জাহাজে যারা হত্যাকাণ্ডের শিকার হয়েছেন তাদের দুইজনের বাড়ি ফরিদপুরে। নিহত এই দুইজন সম্পর্কে মামা-ভাগনে।

জাহাজের মাস্টার (চালক) ছিলেন গোলাম কিবরিয়া (৬৫)। তিনি ফরিদপুর সদরের গেরদা ইউনিয়নের জোয়াইড় গ্রামের বাসিন্দা মৃত দিনেশ মন্ডল ও আছিয়া বেগমের (৮২) ছেলে। গোলাম কিবরিয়া চার ভাই ও এক বোনের মধ্যে বড়। তিনি এক ছেলে ও দুই মেয়ের বাবা।

গত ৪০ বছর ধরে জাহাজে চালক হিসেবে কর্মরত ছিলেন গোলাম কিবরিয়া। বয়স বেড়ে যাওয়ায় কাজ ছেড়ে দেওয়ার কথা ভাবছিলেন তিনি। এজন্য একমাত্র বোনের ছেলে ভাগনে সবুজ শেখকে (২৫) নিয়ে যান জাহাজে। গোলাম কিবরিয়ার স্বপ্ন ছিল সবুজকে কাজ শিখিয়ে জাহাজের হাল ধরানোর জন্য উপযুক্ত করে তোলা। এ জন্য গত ১৫ দিন আগে তিনি সবুজকে চট্টগ্রাম নিয়ে যান। সেখানে গিয়ে মামার চালিত জাহাজেই উঠেন সবুজ। ভাগনেকে প্রতিষ্ঠার পাশাপাশি বড় মেয়ে হাবিবা আক্তারের (২৩) বিয়ের দিন ঠিক করা হয় আগামী ১০ জানুয়ারি। ছেলে মাগুরার মহম্মদপুরের মুজাহিদুল ইসলাম (৩২)। কিছুদিন আগে তাদের মধ্যে কাবিন সম্পন্ন হয়েছে।

হত্যার শিকার দুজনের এলাকা ফরিদপুর সদর উপজেলার গেরদা ইউনিয়নের জোয়াইড় গ্রামে গিয়ে এসব তথ্য জানা গেছে। আজ মঙ্গলবার (২৪ ডিসেম্বর) ওই গ্রামে গিয়ে আত্মীয়স্বজন ও তাদের প্রতিবেশীদের সঙ্গে কথা হয়।

গোলাম কিবরিয়ার স্ত্রী ওয়াহিদা বেগম জানান, তার স্বামী বেশ কিছুদিন ধরেই বলছিলেন তার বয়স বাড়ছে আর বেশি দিন কাজ করবেন না। তাই জাহাজের চাকরি শেষ করে এলাকায় এসে রাস্তার পাশে বাড়িসংলগ্ন একটি মুদি দোকান দেবেন। সেই দোকানের জন্য ঘরের কাঠামোও বানানো হয়েছে। তিনি বলেন, এই ঘটনা (হত্যাকাণ্ড) শুনে প্রথমে আমাদের বিশ্বাসই হয়নি। যারা আমার স্বামীরে মারলো তাদের ফাঁসি চাই।

বিজ্ঞাপন

গোলাম কিবরিয়ার ভাগনে সবুজ ছয় ভাই ও চার বোনের মধ্যে চতুর্থ। সবুজ কোনো কাজে থিতু হতে পারছিলেন না। অনেকটা ভবঘুরের মতো জীবনযাপন করতেন। অন্য ভাই-বোনেরা যে যার কাজ নিয়ে ব্যস্ত। তাই সবুজকে নিয়ে মা রাজিয়া বেগমের চিন্তার কোনো শেষ ছিল না। এর মধ্যে ভাই গোলাম কিবরিয়া প্রস্তাব দেয় সবুজকে জাহাজে নেওয়ার। এ প্রস্তাবে তিনি অনেক খুশি হন।

সবুজের মা রাজিয়া বেগম বলেন, আমার ভাই গোলাম কিবরিয়া আমার ছেলেকে কাজ শেখানোর জন্য তার নিজের কাছে নিয়ে গিয়েছিল। আমার কে এমন ক্ষতি করলো। চোর-ডাকাতের হাতে দুজনের মৃত্যু হলো।

আজ মঙ্গলবার গোলাম কিবরিয়ার বাড়িতে গিয়ে দেখা যায়, জুয়াইড় গ্রামের সার্বজনীন গোরস্থানে মামা-ভাগনের জন্য খোঁড়া হয়েছে জোড়া কবর। এই প্রতিবেদন লেখার সময় (রাত ১০টা) তাদের গোসল করানো হচ্ছিলো। এরপর জানাজা শেষে তাদের দাফন করা হবে।

দুটি মৃত্যুর ঘটনায় এলাকাবাসী হতবিহ্বল। স্থানীয় বাসিন্দা ও তাদের প্রতিবেশী আরিফ হোসেন বলেন, গত ৪০ বছর ধরে মাস্টার হিসেবে কাজ করেন গোলাম কিবরিয়া। তিনি দুই-তিন মাস পর পর জাহাজ লোড-আনলোডের সুযোগে বাড়িতে আসতেন। তবে দুই-তিন দিনের বেশি থাকতে পারতেন না।

সবুজ শেখের ভাই বিপ্লব শেখ বলেন, এটা ডাকাতি নয়। এটা হত্যাকাণ্ড। ঘাতকরা জাহাজের কোনো জিনিসপত্রে হাত দেয় নাই। মানুষগুলোকে কুপিয়ে হত্যা করে গেল। এর পেছনে অবশ্যই অন্য কোনো রহস্য রয়েছে। সরকারকে এ রহস্য বের করতে হবে। আমরা এই হত্যাকারীদের দেখতে চাই এবং হত্যার বিচার চাই।

Please Share This Post in Your Social Media

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category

পুরাতন সংবাদ পড়ুন

সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি রবি
 
১০১১
১২১৩১৪১৫১৬১৭১৮
১৯২০২১২২২৩২৪২৫
২৬২৭২৮২৯৩০৩১  
© All rights reserved
ওয়েবসাইট ডিজাইন : ইয়োলো হোস্ট