নারায়ণগঞ্জ প্রতিনিধি: নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জে ঘরভাড়া নিয়ে বিরোধের জেরে মো. আবুল বাশার (৭০) নামে এক বাড়িওয়ালার মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে। সোমবার (২৩ জুন) রাত সাড়ে ১১টার দিকে নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের ১ নম্বর ওয়ার্ডের পাইনাদি নতুন মহল্লায় এই ঘটনা ঘটে। মৃত আবুল বাশার ওই এলাকার স্থায়ী বাসিন্দা এবং ঘটনার স্থল বাড়ির মালিক।

এ ঘটনায় পুলিশ ভাড়াটিয়া সোহাগ হোসেন (২৯), তার স্ত্রী আলেহা বেগম (২২) ও মা ফাতেমা বেগম (৪৫)-কে আটক করেছে।

পুলিশ ও স্থানীয়দের বরাতে জানা গেছে, সোহাগ হোসেনের পরিবার প্রায় দেড় বছর ধরে আবুল বাশারের বাড়িতে ভাড়া থাকছিল। কিন্তু গত তিন মাস ধরে তারা ভাড়া না দেওয়ায় বাড়িওয়ালার সঙ্গে তাদের প্রায়ই বাকবিতণ্ডা হতো। ঘটনার দিন রাতে আবুল বাশার ক্ষুব্ধ হয়ে নিজেই ভাড়াটিয়ার ঘরে তালা লাগিয়ে দেন।

রাত সাড়ে ১১টার দিকে সোহাগ বাসায় ফিরে গেট বন্ধ দেখে বাড়িওয়ালার ছেলে নাফিজ (৩৫)-এর কাছে গেট খুলে দেওয়ার অনুরোধ করেন। গেট খোলার পর শুরু হয় বাকবিতণ্ডা, যা একপর্যায়ে হাতাহাতিতে রূপ নেয়। এ সময় নাফিজের ছোট ভাই বাধন (৩২) ঘটনাস্থলে এসে তর্কে জড়িয়ে পড়েন।

বাকবিতণ্ডার মধ্যে পরিস্থিতি সামাল দিতে এগিয়ে আসেন আবুল বাশার, সোহাগের স্ত্রী ও মা। তখন ধস্তাধস্তির একপর্যায়ে আবুল বাশার হঠাৎ মাটিতে পড়ে যান এবং আহত হন। দ্রুত তাকে স্থানীয় প্রো-অ্যাকটিভ হাসপাতালে নেওয়া হয়। পরে অবস্থার অবনতি হলে খানপুর ৩০০ শয্যা হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

প্রত্যক্ষদর্শীদের একজন জানিয়েছেন, ধস্তাধস্তির সময় আবুল বাশার ভাড়াটিয়াদের নয়, বরং নিজের ছেলে নাফিজের ধাক্কায় পড়ে যান বলে তারা দাবি করেছেন।

সিদ্ধিরগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ শাহিনূর আলম ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, “ঘরভাড়ার জেরেই সংঘর্ষের সূত্রপাত। বাড়িওয়ালা আহত অবস্থায় হাসপাতালে নেওয়া হলে পরে তিনি মারা যান। ভাড়াটিয়া পরিবারের তিন সদস্যকে আটক করা হয়েছে। নিহতের পরিবারের পক্ষ থেকে গলাটিপে হত্যার অভিযোগ করা হয়েছে। বিষয়টি তদন্ত করে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”

তিনি আরও জানান, এ ঘটনায় একটি মামলা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।