1. shadhinsomoy.com@gmail.com : স্বাধীন সময় : স্বাধীন সময়
  2. info@www.shadhinsomoy.com : স্বাধীন সময় :
বৃহস্পতিবার, ০১ মে ২০২৫, ০১:১৮ অপরাহ্ন

যুদ্ধবিধ্বস্ত গাজা ধ্বংসস্তূপের মাঝে তাঁবুতেই ‘নুরের বিউটি পার্লার’

  • Update Time : মঙ্গলবার, ১১ মার্চ, ২০২৫

হাতে মেকআপ ব্রাশ। দরদ মাখা হাতে বেশ যত্ন নিয়েই আঁচড়ে আঁচড়ে সামনের জনের চোখ সাজাচ্ছেন নুর। পুরো নাম নুর আল-ঘামারি।

গাজা শহরের পূর্বে আল-শুজাইয়ায় ধ্বংসস্তূপের মাঝে তাঁবু টাঙিয়ে নিজের পার্লার খুলেছেন তিনি। খুব বেশি কিছু না থাকলেও একটি আয়না, চিরুনি, ময়েশ্চারাইজার এবং কিছু মেকআপ পণ্য রয়েছে পার্লারটিতে।

তাঁবুর বাইরে পর্দাযুক্ত প্রবেশপথে টাঙানো হয়েছে সাইনবোর্ড। যেখানে লেখা-‘নুরের স্যালুন’।

নুর বলেছেন, আমি পার্লার খোলার পর থেকে অনেক নারী আমার কাছে হৃদয়বিদারক গল্প নিয়ে এসেছেন। তাদের পরিবার এবং প্রিয়জনদের হারানোর কথা বলেছেন। তারা ক্লান্ত হয়ে এখানে আসেন।

যুদ্ধের মাঝে বিউটি সেলুনের ধারণাটি অনেকের কাছে অদ্ভুত মনে হতে পারে। তবে এটি নারীদের মন ভালো রাখতে সাহায্য করছে বলেই মনে করেন নুর। তার কাছে আসা আমানির এমনটাই মনে করেন।

নুর বিশ্বাস করেন, যুদ্ধ গাজার নারীদের প্রতি বেশ নিষ্ঠুর ছিল।

নুর বলেন, ‘আমি তাদের সান্ত্বনার জন্য একটি মুহূর্ত দেওয়ার চেষ্টা করি। আমার মূল লক্ষ্য হলো তারা যেন একটু হালকা ও একটু সুখী বোধ করে।’ তার সব বয়সি ক্লায়েন্টও মনে করেন, তাদের নিজেদের যত্ন নেওয়া অপরিহার্য। সব নারীর প্রতি নুরের বার্তা-‘যাই হোক না কেন, নিজের যত্ন নিন। জীবন ছোট।’

গাজায় ঠিক তখনই ইসরাইলের হামলা শুরু হয়, যখন নূর ইট-মর্টারের বিউটি সেলুন খোলার স্বপ্ন দেখছিলেন। কিন্তু যুদ্ধের কারণে তার জীবন, পরিকল্পনা সবকিছু ওলট-পালট হয়ে যায়। দক্ষিণে পালিয়ে যাওয়ার পর দুই মাস শুধু বেঁচে থাকার লড়াই নিয়েই ভাবতে হয়েছে তাকে।

নূর বলেন, কয়েক মাস পর, যখন আমরা শরণার্থী শিবিরে কিছুটা স্থিতিশীল হলাম, তখন শুনতে পেলাম নারীরা বলছে, ‘ইশ, যদি কাছাকাছি একটা পার্লার থাকত, তাহলে একটু যত্ন নেওয়া যেত।’ তখন আমি বললাম, ‘আমি তো বিউটিশিয়ান!’

এই কথা শোনার পর আশেপাশের নারীরা যেন তাকে আশীর্বাদ হিসেবে গ্রহণ করলেন। কেউ তার কাছে এলেন, আবার তিনি নিজেই অনেকের তাঁবুতে গিয়ে তাদের যত্ন নিলেন। এখন, তার এই কাজ তার পরিবারকে অর্থনৈতিকভাবে সাহায্য করছে, যদিও তিনি বেশি অর্থ নিতে পারেন না।

যুদ্ধের শুরুর দিকে আমানি দ্বেইমা দেইর আল-বালাহে বাস্তুচ্যুত হয়েছিলেন। সম্প্রতি উত্তর অঞ্চলে ফিরে এসেছেন তিনি। এখানে বিউটি পার্লারে যাওয়ার বিষয়ে একদম ভাবেননি আমানি। তবে একসময়, দেইর আল-বালাহে তিনি একটি অনুরূপ পার্লার খুঁজে পান এবং সেখানে নিয়মিত যেতে শুরু করেন।

আমানি বলেন, নিজের যত্ন নেওয়া আমার মেজাজ পরিবর্তন করে। বিশেষ করে, যখন আমি আয়নায় নিজেকে দেখি। আমি সবসময় নিজেকে উপস্থাপনযোগ্য দেখাতে চাই। আমাদের চারপাশে সমস্যা কখনও শেষ হয় না। বিউটি পার্লারে যাওয়া আমাদের সমস্যা কিছুটা হলেও দূর করে।

তিনি উচ্ছ্বসিত হয়ে বলেন, নূরের পার্লার দেখে তিনি ‘উল্লাসিত’ হন। সঙ্গে সঙ্গে তার প্রতিবেশী ও আত্মীয়দের মধ্যে এই সুখবরটি ছড়িয়ে দেন।

Please Share This Post in Your Social Media

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category

পুরাতন সংবাদ পড়ুন

সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি রবি
 
১০১১
১২১৩১৪১৫১৬১৭১৮
১৯২০২১২২২৩২৪২৫
২৬২৭২৮২৯৩০৩১  
© All rights reserved
ওয়েবসাইট ডিজাইন : ইয়োলো হোস্ট