1. shadhinsomoy.com@gmail.com : স্বাধীন সময় : স্বাধীন সময়
  2. info@www.shadhinsomoy.com : স্বাধীন সময় :
শুক্রবার, ০২ মে ২০২৫, ১২:৪৭ অপরাহ্ন

মায়ের মৃত্যুর পর বাবা জেলে, যমজ বোন নিয়ে বিপাকে দুই শিশু

  • Update Time : মঙ্গলবার, ১২ নভেম্বর, ২০২৪

গত এক মাস আগে জন্ম নেয় ১৩ বছরের শিশু সাজ্জাদ মোল্লার যমজ বোন। এর একসপ্তাহ পরই তার মায়ের মৃত্যু হয়। গত সপ্তাহে রাজনৈতিক মামলায় কারাবন্দি হন দিনমজুর বাবা জামাল মিয়া। এমন অবস্থায় দুগ্ধপোষ্য দুই বোনসহ তিন বোনকে নিয়ে খেয়ে না খেয়ে মানবেতর দিন পার করছে সাজ্জাদ।

সাজ্জাদ গোপালগঞ্জের কোটালিপাড়ার  চিত্রাপাড়া গ্রামের জামাল মিয়ার বড় ছেলে ও স্থানীয় এম এম খান উচ্চ বিদ্যালয়ের সপ্তম শ্রেণির ছাত্র।খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, জামাল মিয়া পেশায় একজন দিনমজুর। গত এক মাস আগে জামাল মিয়ার স্ত্রী সাথী বেগম একসঙ্গে দুই কন্যা সন্তানের জন্ম দেন। এর ছয়দিন পর সাথী বেগমের মৃত্যু হয়। এতে সদ্য জন্ম নেওয়া দুগ্ধপোষ্য দুই মেয়েসহ চার ছেলে-মেয়েকে নিয়ে মানসিকভাবে ভেঙে পড়েন। ঘরে অসুস্থ মা ও চার শিশু সন্তানের লালনপালন করে দিন কাটছিল দিনমজুর জামাল মিয়ার।
এ অবস্থায় গত শুক্রবার (০৮ নভেম্বর) দিনগত রাতে কোটালীপাড়া থানা পুলিশ জামাল মিয়াকে বাড়ি থেকে ধরে থানায় নিয়ে যায়। এরপর তাকে গোপালগঞ্জ সদর থানায় হস্তান্তর করা হয়। পরদিন শনিবার (৯ নভেম্বর) গোপালগঞ্জ সদর থানা পুলিশ জামাল মিয়াকে স্বেচ্ছাসেবক দলের কেন্দ্রীয় কমিটির ক্রীড়া সম্পাদক শওকত আলী দিদার হত্যা মামলায় সন্দেহভাজন হিসেবে গ্রেপ্তার দেখিয়ে কারাগারে পাঠায়।
কিশোর সাজ্জাদ মোল্যা বলে, কয়েকদিন পরেই আমার বর্ষিক পরীক্ষা শুরু হবে। স্কুলে যাওয়া বন্ধ হয়ে গেছে। বাড়িতেও বই পড়তে পারি না। আমার স্কুলের বেতন ও পরীক্ষার ফি কে দেবে? আমার একমাস বয়সের দুই বোনের দুধের টাকা কে দেবে? আজ তিনদিন আমাদের ঘরে চুলা জ্বলে না। বাড়ির আশপাশের লোকজন আমাদের খাওন দিচ্ছে। এভাবে কয়দিন চলবে? আমার বাবাকে মিথ্যা মামলায় আটক করা হয়েছে। আমরা আমাদের বাবাকে ফেরত চাই।
জামাল মিয়ার ভাই মনির মিয়া বলেন, আমার ভাই বর্তমানে কোনো রাজনৈতিক দলের সঙ্গে জড়িত না। একসময় সে আমতলী ইউনিয়ন যুবদলের সাধারণ সম্পাদক ছিল। পুলিশ কী কারণে আমার ভাইকে ধরে নিয়ে হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে জেলে পাঠিয়েছে তা আমাদের জানা নেই। তিনি আরও বলেন, আমার ভাইয়ের প্রথম সন্তান সাজ্জাদ মিয়া এম এম খান উচ্চ বিদ্যালয়ের সপ্তম শ্রেণিতে পড়ে। দ্বিতীয় সন্তান ফারিয়া চিত্রাপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে প্রথম শ্রেণির ছাত্রী। এছাড়াও ১ মাস বয়সি দুই মেয়ে আছে তার। এই দুই কন্যা সন্তান জন্মের ছয় দিনের মাথায় জামালের স্ত্রী সাথী বেগম মারা যান। আমার বৃদ্ধা মায়ের দেখাশোনা আমার ভাই জামালই করতো। এখন জামালের চার শিশু সন্তান ও বৃদ্ধা মায়ের দেখাশোনা করার কেউ নেই। দ্রুত সময়ের মধ্যে আমি আমার ভাইয়ের মুক্তি চাই।
প্রতিবেশী কাইয়ুম মিয়া বলেন, জামাল কোনো রাজনীতির সঙ্গে জড়িত নেই। তারপরেও তাকে কেন একটি রাজনৈতিক হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে জেলে পাঠানো হলো? জামালের অবুঝ চার শিশু সন্তানের দায়িত্ব এখন কে নেবে? জামালকে যেভাবে গ্রেপ্তার করা হয়েছে তা সম্পূর্ণ অন্যায় ও অমানবিক। তাই এই চার শিশুসন্তান ও অসুস্থ বৃদ্ধা মায়ের দিকে তাকিয়ে আমরা এলাকাবাসী জামালের মুক্তির দাবি জানাই।কোটালীপাড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবুল কালাম আজাদ বলেন, জামাল মিয়া ঢাকার তেজগাঁও থানা শ্রমিক লীগের যুগ্ম আহ্বায়ক ছিলেন বলে আমরা জেনেছি। গত শুক্রবার তাকে আটক করে দিদার হত্যা মামলায় গোপালগঞ্জ সদর থানায় পাঠানো হয়। সেখানে হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে তাকে জেলে পাঠানো হয়েছে।

Please Share This Post in Your Social Media

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category

পুরাতন সংবাদ পড়ুন

সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি রবি
 
১০১১
১২১৩১৪১৫১৬১৭১৮
১৯২০২১২২২৩২৪২৫
২৬২৭২৮২৯৩০৩১  
© All rights reserved
ওয়েবসাইট ডিজাইন : ইয়োলো হোস্ট