রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে (রাবি) পোষ্য কোটায় ৫২৫৭তম হয়ে আইন বিভাগে ভর্তির সুযোগ হলেও মেধায় ৭৭১তম হয়েও কেউ ভর্তির সুযোগ পায়নি। জুলাই বিপ্লবের পর বিশ্ববিদ্যালয়ে এমন কোটাকে চরম বৈষম্য অ্যাখ্যা দিয়ে বাতিলের দাবি তুলেছেন শিক্ষার্থীরা। এ নিয়ে শিক্ষক-কর্মকর্তা-কর্মচারী এবং শিক্ষার্থীদের বিপরীতমুখী অবস্থানে চরম চাপে পড়েছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। অবিলম্বে কোটা বাতিল করা না হলে আন্দোলনের হুঁশিয়ারিও দিয়েছেন শিক্ষার্থীরা।
এ ব্যাপারে উপাচার্য অধ্যাপক সালেহ হাসান নকীব বলেন, শিক্ষক, কর্মকর্তা-কর্মচারীরা পোষ্য কোটা বাতিলের পক্ষে নয়। তবে শিক্ষার্থীরা এ কোটা চান না।
দুই পক্ষ বিপরীত মেরুতে থাকায় মাঝে থাকা আমি চাপে পড়েছি। এখন দেখা যাক কি হয়।
জানা গেছে, ২০২৩-২৪ সেশনে বিশ্ববিদ্যালয়ে স্নাতক প্রথমবর্ষে এ ইউনিটে ৩৬ জন, বি ইউনিটে ১৯ জন ও সি ইউনিটে ৩৯ জন পোষ্য কোটায় ভর্তি হয়েছে। এদের অনেকে সাত হাজারের উপরে মেধাস্থান নিয়ে প্রথম সারির সাবজেক্ট পেয়েছে। কেউ ৬৭৯১তম হয়ে লোকপ্রশাসন, ৬৬১৬তম হয়ে রাষ্ট্রবিজ্ঞান, ৬৫৫৩তম হয়ে অর্থনীতি ও ৫২৫৭তম হয়ে আইন পেয়েছে। একই অবস্থা 'বি' ও 'সি' ইউনিটেও। অথচ সাত থেকে আটশতম হয়েও অনেকে ভর্তির সুযোগ পায়নি। ২০২২ সালেও আসন ফাঁকা থাকায় শিক্ষক-কর্মকর্তা-কর্মচারীদের আবেদনের প্রেক্ষিতে ন্যূনতম পাস নম্বর ৪০ থেকে কমিয়ে ৩০ করে ৭১ জনকে ভর্তি করা হয়। এই কোটায় গত পাঁচ বছরে ৪৪২ জনকে ভর্তির সুযোগ দেয়া হয়েছে। তবে প্রতিবারই পোষ্য কোটা বাতিল চেয়ে আন্দোলন হয়েছে। বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের পর এবার পোষ্য কোটা বাতিলের দাবিতে সোচ্চার হয়েছেন শিক্ষার্থীরা। গত ১৪ নভেম্বর আমরণ অনশনেও বসেন তারা। পরদিন পোষ্য কোটা নিয়ে শিক্ষক-কর্মকর্তা-কর্মচারীসহ শিক্ষার্থী প্রতিনিধিদের সঙ্গে আলোচনার পর সিদ্ধান্তের কথা জানান উপাচার্য।
পরদিন উপ-উপাচার্য অধ্যাপক মাঈন উদ্দীনকে সভাপতি করে ২০ সদস্যের এ কোটা পর্যালোচনা কমিটি গঠিত হয়। তবে এ কমিটি সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে দফায় দফায় বৈঠক করে করেও কার্যকরী সিদ্ধান্তে আসতে পারছে না।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন বিশ্ববিদ্যালয়ের সমন্বয়ক সালাউদ্দিন আম্মার বলেন, কোটার যৌক্তিক সংস্কার নিয়ে জুলাই বিপ্লব হয়েছে। অথচ বিপ্লব পরবর্তীতেও পোষ্য কোটার মতো একটা অযৌক্তিক কোটা থেকেই গেছে। এ নিয়ে প্রশাসনও রীতিমত তালবাহানা করছে। অবিলম্বে কোটা বাতিলের পক্ষে প্রশাসনের অবস্থান স্পষ্ট না হলে কঠোর আন্দোলনের কথা জানান তিনি।
এ ব্যাপারে কোটা পর্যালোচনা কমিটির সভাপতি উপ-উপাচার্য অধ্যাপক মাঈন উদ্দীন বলেন, ‘শিক্ষার্থীদের দাবির প্রেক্ষিতে শিক্ষক-কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সঙ্গে বসেছি। শিক্ষার্থীদের সঙ্গেও বসেছি। উভয়েরই পক্ষে বিপক্ষে শক্তিশালী যুক্তি আছে। কোটাভোগীরা এটাকে চাকরির অতিরিক্ত সুবিধা হিসেবে দেখছে। কিন্তু শিক্ষার্থীরা এটা মানতে রাজি নয়। প্রশাসন চালাতে দুই পক্ষকেই দরকার। তাই দ্রুতই মধ্যমপন্থি একটি সিদ্ধান্ত নেয়া হবে।
সম্পাদক ও প্রকাশক : মোঃ সোহেল মিয়া সরকারি, সম্পাদক : শামীম, বার্তা সম্পাদক : ইসমত প্রধান উপদেষ্টা : মোঃ পিন্টু
ঠিকানা : ২২৪ / ১ ফকিরাপুল, মতিঝিল ঢাকা-১০০০ মোবাইল : ০১৭৬৫৮৯৪১৭১