স্বামীর সঙ্গে বিচ্ছেদ হয় প্রায় দশ বছর আগে। অভাবের তাড়নায় ফিরে আসেন বাবার বাড়িতে। বাবার জমিতে ছোট একটি টিনের ঘর করে বসবাস করতেন তিনি। জীবন সংগ্রামে অনেকটা ক্লান্ত এই নারী গত সোমবার বাহ্মণবাড়িয়া জেলার সরাইলে নিজের নাতির বিয়ের অনুষ্ঠানে যোগ দিতে যান। শনিবার বাড়ি ফিরে দেখেন- ঘরের চাল, বেড়া কিংবা কোনো আসবাবপত্রের হদিস নেই।
তার চাচা মো. সিরাজউদ্দিন (৮৩) জানান, ঘর ভাঙার সময় তিনি বাধা দিলে প্রতিপক্ষের লোকজন তাকে মারধর করে তাড়িয়ে দেন।
তিনি দাবি করেন, মাজেদার বসতঘর ও আশপাশের প্রায় ৭০ শতাংশ জমি তার পিতার নামে সিএস এবং আরএস নকশায় রেকর্ডভুক্ত এবং ১৯৪৪ সাল থেকে হালনাগাদ খাজনা দিয়ে ভোগদখল করে আসছেন তারা। এ জমি নিয়ে প্রতিপক্ষের লোকজন আদালতে মামলা দিলেও আদালত পরপর দুইবার তাদের পক্ষে রায় দেন। ইউনিয়ন পরিষদে একাধিকবার বৈঠক হলে চেয়ারম্যানও তাদের পক্ষে লিখিত রায় দেন; কিন্তু সালিশ শেষ হওয়ার আগে ঘর ভেঙে মালামাল লুটপাট করে নেওয়ায় দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেন তিনি।
এ বিষয়ে পিবিআই গাজীপুরের পুলিশ সুপার মোস্তফা কামাল যুগান্তরকে জানান, আমরা আদালতের কপিটি হাতে পেলে তদন্ত করে আইনানুগ ব্যবস্থা নেব।
এ বিষয়ে বিবাদী আ. মতিন জানান, এ জমি নিয়ে আদালতে মামলা চলমান রয়েছে; তাই তার লোকজন টিনের ঘরগুলো ভেঙে ফেলেছে। তবে তিনি তখন ঘটনাস্থলে উপস্থিত ছিলেন না।
মাজেদা যুগান্তরকে জানান, রাজধানীর গুলশানে তৈরি পোশাক কারখানায় কাজ করার সময় বগুড়ার এক সহকর্মীর সঙ্গে বিয়ে হয় তার। তাদের সংসারে তাছলিমা নামের একটি কন্যাসন্তান রয়েছে। তাকে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার সরাইলে বিয়ে দেন। ছেলেমেয়ে নিয়ে সুখেই স্বামীর ঘর করছেন তাছলিমা। সোমবার নাতির বিয়েতে বেড়াতে গেলে প্রতিবেশী আ. মতিন (৪৬) ও তার লোকজন বসতঘরসহ সব ঘর ভেঙে ফেলে। এ সময় তারা ঘরগুলোর টিনসহ সব আসবাপত্র ও টাকাপয়সা লুট করে নিয়ে যায়। তিনি দাবি করেন, তার জীবনের সমস্ত সঞ্চয় হারিয়ে এখন একেবারে নিঃস্ব হয়ে পড়েছেন।
Leave a Reply