রাজবাড়ীর গোয়ালন্দে জাহাজ শ্রমিক জিহাদ সরদার (৩০) ত্রিভুজ পরকীয়ার বলি হয়েছেন বলে জানা গেছে। জিহাদের মরদেহ উদ্ধারের পর গ্রেপ্তারকৃত নারী আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন।
গত রোববার (২৭ এপ্রিল) সকালে গোয়ালন্দ উপজেলার পদ্মা নদীর অন্তর মোড় এলাকা থেকে জিহাদের মাথাবিহীন মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। তবে এখন পর্যন্ত কাটা মাথার কোনো হদিস মেলেনি। পরিবারের সদস্যরা মরদেহের পোশাক ও শরীরের বিভিন্ন চিহ্ন দেখে তাকে শনাক্ত করেন।
এ ঘটনায় গত সোমবার জিহাদের বাবা সহিদ সরদার বাদী হয়ে গোয়ালন্দ ঘাট থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। তিনি উপজেলার ছোটভাকলা ইউনিয়নের কাচরন্দ গ্রামের বাসিন্দা।
মামলার এজাহারভুক্ত তিনজন আসামি হলেন—একই গ্রামের দুবাই প্রবাসী মো. খলিলের স্ত্রী সুমানা পারভীন সেতু (২৪), জিহাদের চাচা বাবলু সরদারের ছেলে সোহাগ সরদার (২৭) ও প্রতিবেশী হারেজ বেপারীর ছেলে হৃদয় বেপারী (২৪)।
এ মামলার প্রধান আসামি সুমানা পারভীন সেতু হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত ছিলেন বলে বুধবার রাজবাড়ীর আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন।
এর আগে, গোয়ালন্দ ঘাট থানা ও দৌলতদিয়া নৌপুলিশ যৌথ অভিযান চালিয়ে মঙ্গলবার দুপুরে সেতুর বাবার বাড়ি একই ইউনিয়নের চর বালিয়াকন্দি গ্রাম থেকে তাকে গ্রেপ্তার করে বুধবার রাজবাড়ীর আদালতে পাঠায়। এরও আগে, মামলার দুই নম্বর আসামি সোহাগকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।
নিহত জিহাদ নারায়ণগঞ্জের একটি জাহাজ মেরামত কারখানায় শ্রমিকের কাজ করতেন। গত বৃহস্পতিবার বিকেলে তিনি বাড়িতে এসে সন্ধ্যার পর থেকে নিখোঁজ হন।
এ বিষয়ে গোয়ালন্দ ঘাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ রাকিবুল ইসলাম বলেন, গ্রেপ্তারকৃত আসামি সুমানা পারভীন সেতু বুধবার রাজবাড়ীর আদালতে জিহাদ হত্যার সঙ্গে তার জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে জবানবন্দি দেন।
সেতুর উদ্ধৃতি দিয়ে ওসি আরও বলেন, জিহাদের সঙ্গে তার পরকীয়ার সম্পর্ক ছিল। একইসঙ্গে হৃদয় ও সোহাগের সঙ্গেও সে অনৈতিক প্রেমের সম্পর্ক চালিয়ে যায়। এই অবৈধ সম্পর্ক চালিয়ে যাওয়ার সুবিধার্থে সে বাবা ও স্বামীর বাড়ি বাদ দিয়ে হৃদয়দের বাড়ির পাশে বাড়ি ভাড়া নিয়ে ৫ বছর বয়সী একমাত্র সন্তান নিয়ে বসবাস করত।
গত বৃহস্পতিবার বিকেলে জিহাদ কর্মস্থল থেকে বাড়ি ফিরে গভীর রাতে ওই নারীর সঙ্গে দেখা করতে যান। কিন্তু হৃদয় ও সোহাগ ওই নারীর সঙ্গে যোগসাজশ করে জিহাদকে নদীর পাড়ে নিয়ে নির্মমভাবে হত্যা করে বডি ও মাথা নদীতে ফেলে দেয়।
এ হত্যাকাণ্ডের এজাহারভুক্ত পলাতক আসামি হৃদয়সহ পরিকল্পনার সঙ্গে আরও কেউ জড়িত ছিল কিনা তা খতিয়ে দেখে দ্রুত তাদের গ্রেপ্তার করা হবে বলেন পুলিশের এই কর্মকর্তা।
Leave a Reply