
ঢাকা-ভাঙ্গা এক্সপ্রেসওয়েতে বেপরোয়া গতি ও আইন অমান্য করার কারণে একের পর এক দুর্ঘটনা ঘটছে। দেশের প্রথম এই এক্সপ্রেসওয়ে এখন দুর্ঘটনার ‘হটস্পটে’ পরিণত হয়েছে। চলতি মাসের মাত্র ২১ দিনে ১৩টি দুর্ঘটনায় প্রাণ হারিয়েছেন ১০ জন। তবুও দুর্ঘটনা রোধে নেয়া হয়নি কার্যকর কোনো ব্যবস্থা।
যানবাহনের বেপরোয়া গতি। প্রায়ই ঘটছে দুর্ঘটনা। মৃত্যুর ফাঁদে পরিণত হয়েছে দেশের প্রথম ঢাকা-ভাঙ্গা এক্সপ্রেসওয়ে। গত ২৭ ডিসেম্বর এক্সপ্রেসওয়ের ধলেশ্বরী টোল প্লাজায় বাস পিষে দেয় প্রাইভেট কার। এতে নিহত হন ছয়জন।
এছাড়া গত ১৮ এপ্রিল মুন্সীগঞ্জের শ্রীনগরে বেপরোয়া যাত্রীবাহী চলন্ত বাসের ছাদ উড়ে যায়। গত ৮ মে নিমতলায় চাকা পরিবর্তনের সময় অ্যাম্বুলেন্সকে পেছন থেকে বাসের ধাক্কায় মারা যান মা-বাবা বোনসহ একই পরিবারের ৫ জন। এমন ঘটনার পরও চালু থাকা প্রযুক্তির ব্যবহার হচ্ছে না। সবশেষ ২১ আগস্ট এক দিনে দুই দুর্ঘটনায় মৃত্যুর মিছিল যুক্ত হয় আরও ৬ জন। এছাড়া, একই মাসে আরও ১১টি দুর্ঘটনায় প্রাণ হারান ৪ জন। আহত হন অন্তত ৩৫ জন।
চালকদের অভিযোগ, অনেক চালক নেশাগ্রস্ত হয়ে বেপরোয়া গতিতে গাড়ি চালায়। আবার মোটরসাইকেল চালকেরা অতিরিক্ত গতিতে বাইক চালানোর কারণে তাদের সাইড দিতে গিয়েও প্রায়ই দুর্ঘটনা ঘটে।
এদিকে, রাজধানীর ধোলাই খাল থেকে মাওয়া পর্যন্ত ৩২ কিলোমিটারে স্বয়ংক্রিয় নম্বর প্লেট ও গতি শনাক্তকরণ ক্যামেরা এবং পরিবর্তনশীল লেনে মেসেজিং সাইনসহ নানা সুবিধা সম্বলিত ইন্টেলিজেন্ট ট্রান্সপোর্ট সিস্টেম (আইটিএস) চালু হয়েছে। তবে এর সঠিক প্রয়োগ না থাকায় বিশ্বমানের এই পথে ট্রাফিক আইন অমান্যের প্রতিযোগিতা চলছে।
মুন্সীগঞ্জ হাসাড়া হাইওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবু নাঈম সিদ্দিকী জানিয়েছেন, হাইওয়েতে স্থাপন করা ভিডিও ক্যামেরার মাধ্যমে গাড়ি শনাক্ত করে অনলাইনে মামলা দেয়ার প্রক্রিয়া শিগগিরই চালু করা হবে।
সড়ক ও জনপথ বিভাগ বলছে, হাইওয়ে পুলিশকে আইটিএসের সঙ্গে সম্পৃক্ত করা হবে। তবে দুর্ঘটনারোধে ট্রাফিক আইন সঠিক প্রয়োগ ও সচেতনতা দরকার। মুন্সীগঞ্জ সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী মাসুদ মাহমুদ সুমন বলেন, ট্রাফিক ম্যানেজমেন্ট সেন্টারের মাধ্যমে আইটিএস সিস্টেম চালুসহ নানা পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে। হাইওয়ে পুলিশও এই সফটওয়্যারের মাধ্যমে যুক্ত থাকবে এবং অনিয়ন্ত্রিতভাবে গাড়ি চালালে তাদের বিরুদ্ধে মামলা দেয়া সম্ভব হবে।
সরকারি তথ্য অনুযায়ী, শুধু গত জুলাই মাসেই এক্সপ্রেসওয়েতে ১৮টি দুর্ঘটনা ঘটেছে। আর এক্সপ্রেসওয়ে চালুর পর গত তিন বছরে মোট ১ হাজার ৩০৩টি দুর্ঘটনায় প্রাণ হারিয়েছেন ১৮৪ জন।
Leave a Reply