1. shadhinsomoy.com@gmail.com : স্বাধীন সময় : স্বাধীন সময়
  2. info@www.shadhinsomoy.com : স্বাধীন সময় :
বৃহস্পতিবার, ০১ মে ২০২৫, ০৪:০৩ অপরাহ্ন

আশুলিয়া দুই শিশুকে কোলে নিয়ে জামিন নিলেন হানিয়া বেগম, অসুস্থ হয়ে পড়েছে দুগ্ধপোষ্য দুই শিশু

  • Update Time : বৃহস্পতিবার, ১৯ ডিসেম্বর, ২০২৪

বিজ্ঞাপন

এনজিওর দায়ের করা এনআই অ্যাক্টের মামলায় দুই শিশু সন্তানকে  কোলে নিয়ে জামিন নিলেন হানিয়া বেগম। এর আগে মঙ্গলবার রাতে দুই শিশুসহ মাকে গ্রেফতার করে আশুলিয়া থানা পুলিশ। এ নিয়ে এলাকাজুড়ে বেশ চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়।

আশুলিয়া থানার ওসি আবু বকর সিদ্দিক বৃহস্পতিবার যুগান্তরকে জানান, আমরা ওয়ারেন্ট থাকায় ওই নারীকে শিশু বাচ্চাসহ গ্রেফতার করি। তবে এ নিয়ে ব্যাপক সমালোচনা শুরু হলে বুধবার দুপুরেই দুই শিশুসহ তাদের আদালতে পাঠিয়ে দেই।

শত শত ওয়ারেন্ট থাকলেও কেন ওই নারীকে কোলের বাচ্চাসহ গ্রেফতার করা হলো- এমন প্রশ্নের জবাবে ওসি আবু বকর সিদ্দিক বলেন, বাদী নিজে থেকে পুলিশকে দিয়ে আসামিকে গ্রেফতার করায়। তিনি বলেন, বাচ্চারা সঙ্গে থাকায় সন্ধ্যার দিকেই আদালত তাকে জামিন দিয়েছেন।

জামিন পেয়ে হানিয়া বলেন, আমি জানতাম না পুলিশ আমাকে গ্রেফতার কেন করেছে। শুধু শুনেছি আমার স্বামী নাকি লোনের কিস্তি দিতে পারে নাই। তাই তারা আমার নামে মামলা দিয়েছে। অথচ আমি কোনো এনজিও থেকে টাকাই তুলিনি। সব তার স্বামী করেছে। স্বামীকে কিছু না বলে পুলিশ আমার শিশু সন্তানসহ আমাকে বাড়ি থেকে ধরে এনেছে কেন?

এর আগে মঙ্গলবার রাত সাড়ে ১০টায় আশুলিয়া থানার এসআই নজরুল ইসলাম ওই নারী ও তার দুই শিশু পুত্রকে তার বাড়ি থেকে কনকনে শীতের মধ্যে থানায় ধরে নিয়ে আসেন। ঠাণ্ডার মধ্যে অমানবিক অবস্থায় রাখা হয় তাদের। বোরকার ভাঁজের মধ্যে দুই শিশুকে শীত থেকে বাঁচাতে আগলে রাখেন গ্রেফতার হওয়া মা।

বিজ্ঞাপন

থানার ভেতর থেকে শীতের কাঁপুনিতে শিশুদের কান্নার আওয়াজে উপস্থিত সবাই বিচলিত হলেও তাদের একটি কম্বলও দেওয়া হয়নি। কান্নার আওয়াজ শুনে নারীর স্বামী মনিরকেও ভিতরে যেতে দেওয়া হয়নি।

হানিয়ার স্বামী মনির হোসেন বৃহস্পতিবার বিকালে মোবাইল ফোনে যুগান্তরকে জানান, আমার স্ত্রী ও দুই শিশু সন্তানকে নিয়ে থানার একটি কক্ষে আটক রাখার খবর পেয়ে মামলার বাদী ব্যাংক কর্মকর্তা   নাজমুল ইসলামকে সঙ্গে নিয়ে থানায় যাই; কিন্তু নাজমুল থানার বাহিরে এসে বলেন- এখন ওদের ছাড়িয়ে নিতে হলে ওসিকে টাকা দিতে হবে। পরে আমি টাকা দিতে না পারায় সারা রাত তাদের আটকে রেখে বুধবার বেলা ১১টার দিকে আমার দুই শিশুসহ পরিবারকে আদালতে পাঠানো হয়। আদালত শুনানি শেষে জামিন দিলে বুধবার রাতে ১০টায় সাভারে ফিরে আসি। তবে ইতোমধ্যেই ওরা সবাই অসুস্থ হয়ে পড়লে তাদের দেশের বাড়ি শিমুলিয়া ইউনিয়নের ভাড়ালিয়া গ্রামে পাঠিয়ে দেই।

মনির আরও জানান, তিনি লোন নিয়েছেন কিন্তু ওরা আমার বিরুদ্ধে মামলা না করে আমার স্ত্রীর বিরুদ্ধে মামলা করে ওয়ারেন্ট বের করে আনল কেন? তিনি লোনের তিন লাখের মধ্যে দুই লাখ ৪০ হাজার পরিশোধও করেছেন বলে জানান।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বছরখানেক আগে একটি এনজিওর পল্লীবিদ্যুৎ শাখা থেকে ৩ লাখ টাকা ঋণ নেন মনির হোসেন। ঋণের ২ লাখ ৪০ হাজার টাকা পরিশোধ করলেও প্রায় এক লাখ টাকা পরিশোধে ব্যর্থ হন। পরে এনজিও কর্তৃপক্ষ চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে একটি মামলা দায়ের করেন। ওই মামলায় ঋণ গ্রহীতা মনির হোসেনের জামিনদার হিসেবে স্ত্রী হানিয়া বেগমকে আসামি করা হয়। পরে পুলিশ তাকে ও আড়াই বছরের রায়হান আর ১৪ মাস বয়সের মাশরাফ সন্তানকে থানায় নিয়ে আসে।

গ্রেফতার অভিযানে নেতৃত্ব দেওয়া এসআই নজরুল ইসলাম বলেন, হানিয়া বেগমের নামে আদালতের গ্রেফতারি পরোয়ানা থাকায় তাকে আটক করা হয়েছে। সঙ্গে তার দুই শিশু সন্তানও রয়েছে, তারা বুকের দুধ খায় তাই রেখে আসতে পারিনি। বিষয়টি জানাজানি হলে খোদ পুলিশেও সৃষ্টি হয়েছে সমালোচনা।

পুলিশের এক এসআই বলেন, ছোট ছোট বাচ্চা দুটিকে নিয়ে আসা ঠিক হয়নি। সারা রাত শীতে কষ্ট করেছে, কান্নাকাটি করেছে। হয় তাকে আদালতে জামিন হতে বলে চলে আসা, না হয় বাচ্চা দুটিকে কোনো আত্মীয়র কাছে রেখে আসা উচিত ছিল। এখন যে কেউ বাচ্চা দুটিকে দেখলে- পুলিশের বিরুদ্ধে খারাপ ধারণা সৃষ্টি হচ্ছে।

বিজ্ঞাপন

এলাকাবাসী সিজান বলেন, এটি মানবাধিকার লঙ্ঘন হয়েছে। সমাজে দাপটের সঙ্গে একাধিক মামলার আসামিরা ঘোরাফেরা করছেন। কেউ হত্যা মামলার আসামি হয়েও রাতে বাসায় ঘুমাচ্ছেন, অথচ সামান্য কয়টা টাকার জন্য দুই দুগ্ধপোষ্য শিশুকে থানায় নিয়ে আসা কতটুকু যৌক্তিক।

বিষয়টি নিয়ে সুশীল সমাজের প্রতিনিধি সুশাসনের জন্য নাগরিকের ঢাকা বিভাগের সমন্বয়কারী জিল্লুর রহমান বলেন, এই শীতে বাচ্চা দুটিকে থানায় রাখাটি অমানবিক। পুলিশ ইচ্ছা করলে বাচ্চা দুটিকে আরও ভালো সুরক্ষা দিতে পারত। কারণ ওসির অনেক দায়িত্ব ছিল। ওই নারী তো আর হত্যা কিংবা বড় কোনো অপরাধের সঙ্গে জড়িত না।

বিষয়টি নিয়ে আশুলিয়া থানার ওসি আবু বকর সিদ্দিক বলেন, এটা দুঃখজনক। বিষয়টি দেখছি। তবে সারা রাত হাজতখানায় থাকলেও  বাচ্চা দুইটির বিষয়ে কোনো পদক্ষেপ নিতে দেখা যায়নি ওসিকে।

এদিকে মনির বলেন, গ্রেফতারের সময় বাদী ছিল না। অথচ ওসি  বলেছেন- বাদী গিয়ে পুলিশকে ধরিয়ে দিলে আমাদের করণীয় কী হতে পারে। এ বিষয় বাদী নাজমুল জানান, মামলা হয়েছিল অনেক আগেই। ওয়ারেন্ট আসাতে পুলিশ গ্রেফতারের পর আমি জানতে পারি। আমি তাদের জিম্মায় নিতে থানায় গেলে পুলিশ তাদের ছেড়ে দিতে টাকা দাবি করে।

Please Share This Post in Your Social Media

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category

পুরাতন সংবাদ পড়ুন

সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি রবি
 
১০১১
১২১৩১৪১৫১৬১৭১৮
১৯২০২১২২২৩২৪২৫
২৬২৭২৮২৯৩০৩১  
© All rights reserved
ওয়েবসাইট ডিজাইন : ইয়োলো হোস্ট