বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সেলিমা রহমান বলেছেন, আমাদের শিল্পী সমাজের একাংশ আবার একত্রিত হয়ে স্বৈরাচারীর জন্য মায়া কান্না কাঁদছে। আমার দুঃখ এখানেই, এরা হলো শিল্পী সমাজ, যারা সমাজের প্রতিনিধি। যারা সমাজকে সত্য ও সৌন্দর্য শেখান। এ শিল্পী সমাজ থাকবে সব সময় সত্য ও ন্যয়ের পক্ষে। আজ দুঃখজনক হলেও সত্যি, আমাদের শিল্পী সমাজের মধ্যে বিভাজন হয়ে গেছে।
মঙ্গলবার রাজধানীর জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী সামাজিক সাংস্কৃতিক সংস্থা (জাসাস) আয়োজিত কালচারাল ফ্যাসিস্টদের বিরুদ্ধে মানববন্ধন কর্মসূচিতে তিনি এ কথা বলেন।
শিল্পীদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, ৫ আগস্ট যে গণঅভ্যুত্থান হয়েছিল, সে গণঅভ্যুত্থানে ছাত্র, যুবক, শ্রমিক, জনতা, নারী, পুরুষ, শিশু- সবাই সেদিন নেমে এসেছিল। সবার বুকে আহাজারি ছিল। সেদিন শিশুদের হত্যা করা হয়েছে। আমার ছাত্র ভাইদের হত্যা করা হয়েছে। সেই দোষ, আপনাদের স্বৈর-সরকারের। গণঅভ্যুত্থানের ফলে পালিয়ে যেতে বাধ্য হয়েছে। অথচ আপনারা এখনো ভুলতে পারছেন না। আপনারা ষড়যন্ত্র করছেন।
তিনি বলেন, আপনারা এখন সজাগ হন। আপনারা শিল্পী, শিল্পচর্চা করেন। আপনাদের চর্চার মধ্যে দিয়ে এদেশের মানুষের সাধারণ জীবন, এদেশের মানুষের চিত্র এবং এদেশের মানুষের কথা বলার যে অধিকার, সে অধিকার যেন ফিরে আসে। আপনারা সাবধান হয়ে যান। কারণ ছাত্রজনতা এবং নারী পুরুষ শিশু সবাই আজকে সচেতন। আপনারা মুক্তিযুদ্ধের চেতনার কথা বলে বাংলাদেশকে শোষণ করেছেন। আপনাদের সহযোগে, আপনাদের সরকার শোষণ করছে। এ প্রতিবাদী শিল্পী সমাজ যারা আছেন তাদেরকে বলতে চাই, সব সময় অন্যায়ের বিরুদ্ধে সোচ্চার থাকবেন। সেই সোচ্চার হবে জনগণের জন্য, জনগণের অধিকারের জন্য, গণতন্ত্রের জন্য।
তিনি বলেন, শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের স্বাধীনতার ঘোষণার মধ্য দিয়ে এ বাংলাদেশ স্বাধীন হয়েছে। তিনি নিজে যুদ্ধ করে এই দেশকে স্বাধীন করেছেন। শুধু তা-ই নয়, রণাঙ্গনে যুদ্ধ করে তিনি বাংলাদেশকে আমাদের উপহার দিয়েছিলেন। এরপর আমাদের আরেক নেত্রী খালেদা জিয়াও এ দেশকে স্বৈরাচারী শাসনের কবল থেকে মুক্ত করেছিলেন। সেই নেত্রীকে মিথ্যা মামলায় বছরের পর বছর ধরে লড়তে হচ্ছে। তবুও তিনি কখনো আপস করেননি। তার একটাই কথা, এ দেশের জনগণ আমার সন্তান। আমি মরলে এদেশেই মরব। সন্তানদের অধিকার রক্ষায় তিনি কারাগারে যাওয়ার সময় বলেছিলেন, দেশ বাঁচাও, মানুষ বাঁচাও। আজও তিনি গণতন্ত্রের জন্য লড়াই করছেন।
সাবেক এই প্রতিমন্ত্রী বলেন, খালেদা জিয়া চাইলে আপস করে অনেক আগেই ক্ষমতায় বসতে পারতেন, কিন্তু তিনি তা করেননি। আজ তাকে মিথ্যা মামলায় জর্জরিত হয়ে বিভিন্ন অসুখে ভুগতে হচ্ছে।
এ সময় পরবর্তী কর্মসূচি ঘোষণায় জাসাসের যুগ্মআহবায়ক গীতিকার ইথুন বাবু বলেন, ২১ দিনের মধ্যে শিল্পকলা থেকে সচিবালয়, সবকটি জায়গা ফ্যাসিস্টমুক্ত করা না হলে আমরা কঠোর আন্দোলন ও কর্মসূচিতে যাবো।
মানববন্ধনে বক্তৃতা করেন বিএনপি কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য নাসরিন সুলতানা, অভিনেতা শিবা শানুসহ শিল্পীরা।
Leave a Reply